ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ
মুঘল আমলে ইরাক হতে কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া এলাকায় আগত ইসলাম প্রচারক ও কামেল পীর শাহ সুফি সৈয়দ আহাম্মদ আলী ওরফে আদারি মিয়া চৌধুরী ইরানি, মুঘল ও বাঙালি স্থাপত্যকলার সমন্বয়ে ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ (Jhaudia Shahi Masjid) নির্মাণ করেন।
কোন শিলালিপি না পাওয়ায় এর নাম বা সঠিক নির্মাণকাল সম্পর্কে জানা যায় না। ঝাউদিয়া গ্রামে অবস্থিত হওয়ায় গ্রামের নাম অনুসারে মসজিদটিকে ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ (Jhaudia Shahi Masjid) বলা হয়। ইট, পাথর, বালি ও চিনামাটি দ্বারা নির্মিত তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটিতে তিন কাতারে ৪৫ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।
ইরানি, মুঘল ও বাঙালি স্থাপত্যকলার সমন্বয়ে অসাধারণ কারুকাজে তৈরী মসজিদের ভিতর ফুল, ফল, লতাপাতা অঙ্কিত। তিনটি মেহরাবের মাঝেরটি আকারে একটু বড়। তিনটি মেহরাব আবার তিন রকম রুপনক্সায় প্রস্তুতকৃত। উত্তর-দক্ষিণে বড় জানালা লাগানো যা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
মসজিদের চার কোণায় চারটি বড় মিনার রয়েছে। সম্মুখের প্রশস্ত চত্বরের সীমানা প্রাচীরের দু্ই প্রান্তে এবং প্রবেশ পথের দুই দিকেও দুটি করে মিনার রয়েছে।
মসজিদটি একরাত্রে গায়েবীভবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে মিথ প্রচলিত আছে। ঐতিহাসিকভাবে এর কোন ভিত্তি না থাকলেও মূলত গায়েবী মসজিদ বিশ্বাস হতেই বহু লোক মসজিদটিতে সাদকা-মানত করে থাকেন।
শাহী মসজিদে কিভাবে যাবেন?
কুষ্টিয়া জেলা শহর হতে ২২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ঝাউদিয়া গ্রামে ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ (Jhaudia Shahi Masjid) অবস্থিত। কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের বৃত্তিপাড়া বাজার হতে ৯ মিলোমিটার পশ্চিমে দৃষ্টিনন্দন এই শাহী মসজিদটির অবস্থান। বাস, সিএনজি, আটো যোগে কুষ্টিয়া শহর হতে ঝাউদিয়া শাহী মসজিদে যাওয়া যায়।
প্রতি শুক্রবার জুম্মার নামাজের দিন মান্নাত-সদকা, দান, প্রাণি সম্প্রদানসহ শিরনি দেওয়ার জন্য দূর দূরান্ত হতে বহু মানুষের ঐতিহ্যবাহি মসজিদটিতে আগমন ঘটে। ফলে মসজিদ প্রাঙ্গনে মেলা বসে। এছাড়াও অনেকেই ঐতিহ্যবাহি মসজিদটি দেখতে ও জুম্মার নামাজ আদায় করতে আসেন।